Battery Library

A comprehensive resource for battery quality assurance.

Categories

You'll find something to spark your curiosity and enhance

১. ব্যাটারির সংক্ষিপ্ত ইতিহাস ও ভিত্তি

ব্যাটারির ধারণা প্রথম আসে ১৭৮০ সালে লুইগি গ্যালভানির "গ্যালভানিক প্রতিক্রিয়া" পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে। এরপর ১৮০০ সালে আলেসান্দ্রো ভল্টা প্রথম আধুনিক ব্যাটারি তৈরি করেন, যেটি "ভল্টাইক পাইল" নামে পরিচিত।

ভল্টাইক পাইল ছিল তামা ও জিঙ্ক ডিস্কের স্তর এবং মাঝখানে ভেজা কাপড় দিয়ে তৈরি, যা এসিডিক দ্রবণে ভেজানো থাকত। এটি একটি রাসায়নিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে ইলেকট্রিক ভোল্টেজ তৈরি করত।

একটি ব্যাটারির মূল তিনটি অংশ হল:
  • অ্যানোড (ঋণাত্মক ইলেকট্রোড)
  • ক্যাথোড (ধনাত্মক ইলেকট্রোড)
  • ইলেকট্রোলাইট (যা আয়ন পরিবহন করে)

গ্যালভানিক সেল নিজে থেকেই বিদ্যুৎ উৎপন্ন করে, আর ইলেক্ট্রোলাইটিক সেলে বাহ্যিক উৎস থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে।

  • ভোল্ট (V): ব্যাটারির চাপ বা পটেনশিয়াল পার্থক্য নির্দেশ করে
  • অ্যাম্পিয়ার (A): প্রবাহিত হওয়া ইলেকট্রনের হার
  • ওয়াট (W): শক্তি = ভোল্ট × অ্যাম্পিয়ার

২. ব্যাটারির ধরণ ও স্থাপত্য

ব্যাটারি সাধারণত দুটি ভাগে ভাগ করা হয়: 一次 (Primary)দ্বিতীয় (Secondary) ব্যাটারি।
  • Primary Battery (যেমন: Alkaline, Zinc-Carbon): পুনঃব্যবহারযোগ্য নয়
  • Secondary Battery (যেমন: Li-ion, Lead-Acid, NiMH): রিচার্জযোগ্য

সুবিধা: হালকা ওজন, উচ্চ শক্তি ঘনত্ব, কম আত্ম-স্রাব, মেমোরি ইফেক্ট নেই।
অসুবিধা: অতিরিক্ত চার্জে বিস্ফোরণ ঝুঁকি, ব্যয়বহুল, শীতল তাপমাত্রায় পারফরম্যান্স কমে যায়।

NiCd ব্যাটারির চার্জিং-ডিসচার্জিং সাইকেল বেশি, কিন্তু এতে মেমোরি ইফেক্ট আছে এবং ক্যাডমিয়াম পরিবেশ দূষণ করে।

লিড-অ্যাসিড ব্যাটারির প্রকার:
  • Flooded (পানিযুক্ত)
  • VRLA (Valve Regulated Lead Acid): AGM ও Gel
ব্যবহৃত হয়: গাড়ি, UPS, সৌরবিদ্যুৎ সংরক্ষণে।

সুপারক্যাপাসিটর তাত্ক্ষণিক শক্তি সরবরাহ করতে পারে, চার্জ দ্রুত হয়, কিন্তু শক্তি সঞ্চয় সীমিত। ব্যাটারি ধীরে চার্জ হয় কিন্তু বেশি শক্তি ধরে রাখতে পারে।

  • সিলিন্ডার: শক্ত কেসিং, বেশি নিরাপদ, সহজ নির্মাণ
  • প্রিজম্যাটিক: ঘন আকৃতি, সাশ্রয়ী স্থান
  • পাউচ: নমনীয়, হালকা, কিন্তু নিরাপত্তা কম

ফুয়েল সেল বাহ্যিক উৎস থেকে হাইড্রোজেন গ্রহণ করে অবিচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে, যেখানে ব্যাটারির শক্তি সীমিত ও সঞ্চিত থাকে।

  • সেল: একক ইউনিট
  • ব্যাটারি: একাধিক সেলের সমন্বয়
  • ব্যাটারি প্যাক: ব্যাটারির সাথে BMS, সেন্সর ইত্যাদির সমন্বয়

৩. ব্যাটারি প্যাকেজিং ও নিরাপত্তা

ব্যাটারি প্যাকেজিং হলো সেল গুলোর নির্দিষ্ট কাঠামোয় সাজানো, যাতে তারা নিরাপদে একত্রে কাজ করতে পারে। এতে কেস, টার্মিনাল, ও সংযুক্তি থাকে।

ব্যাটারি প্যাক সাধারণত তিনভাবে গঠিত হয়:
  • সিরিজ কানেকশন
  • প্যারালাল কানেকশন
  • কম্বিনেশন (Series-Parallel)

লিথিয়াম ব্যাটারি তাপ, শর্ট সার্কিট ও অতিরিক্ত চার্জে অতি সংবেদনশীল। এতে তাপীয় বিস্ফোরণ (Thermal Runaway) ঘটতে পারে, যা আগুন বা বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে।

  • PTC (Positive Temperature Coefficient)
  • CID (Current Interrupt Device)
  • PCM (Protection Circuit Module)
  • Thermal Fuse
এগুলো ব্যাটারির বেশি চার্জ, ওভারকারেন্ট, ও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে।

  • ব্যাটারি 30% SoC এর নিচে চার্জ করে পাঠানো উচিত
  • শর্ট সার্কিট এড়াতে টার্মিনাল টেপ করা
  • UN38.3 সার্টিফিকেট সহ পাঠানো
  • লিথিয়াম ব্যাটারির জন্য আইএটিএ ও DOT নিয়ম মেনে চলা

কেসিং সাধারণত স্টেইনলেস স্টিল, অ্যালুমিনিয়াম, বা পলিমার দিয়ে তৈরি হয়। এটি ব্যাটারিকে যান্ত্রিক আঘাত, তাপ, ও আর্দ্রতা থেকে সুরক্ষা দেয়।

৪. চার্জিং পদ্ধতি

বেশিরভাগ ব্যাটারির চার্জিং তিনটি ধাপে সম্পন্ন হয়: Bulk Charging → Absorption → Float। লিথিয়াম-আয়নের জন্য ব্যবহৃত হয় CC/CV পদ্ধতি।

CC (Constant Current): নির্দিষ্ট কারেন্টে চার্জ শুরু হয়।
CV (Constant Voltage): ভোল্টেজ স্থির রেখে কারেন্ট ধীরে ধীরে কমানো হয় যতক্ষণ না ব্যাটারি সম্পূর্ণ চার্জ হয়।

প্রতিটি ব্যাটারির কেমিস্ট্রি, ক্ষমতা ও নিরাপত্তা সীমা ভিন্ন, তাই প্রতিটি ব্যাটারির জন্য উপযুক্ত ভোল্টেজ ও কারেন্ট নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ।

স্মার্ট চার্জার ব্যাটারির অবস্থা বুঝে স্বয়ংক্রিয়ভাবে চার্জিং নিয়ন্ত্রণ করে। এটি ওভারচার্জ প্রতিরোধ করে এবং ব্যাটারির জীবনকাল বাড়ায়।

USB এর ভোল্টেজ ও কারেন্ট সীমিত এবং নির্দিষ্ট নয়। অনেক ডিভাইস উচ্চ শক্তির চার্জার চায় যা USB দিতে পারে না বা ধীরগতিতে চার্জ হয়।

ফাস্ট চার্জিং ব্যাটারিকে বেশি কারেন্টে চার্জ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে পূর্ণ করে। এতে তাপ সৃষ্টি হয় যা ব্যাটারির আয়ু কমাতে পারে যদি নিয়ন্ত্রণ না থাকে।

বেশি গরমে ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ চাপ বেড়ে যায়, আর ঠান্ডায় চার্জিং ধীর হয় ও কার্যকারিতা কমে। অধিকাংশ চার্জার ০°C–৪৫°C সীমা মেনে চলে।

হ্যাঁ, তবে MPPT/ PWM কন্ট্রোলার ব্যবহার করতে হয় যেন সঠিক ভোল্টেজ ও কারেন্টে ব্যাটারি চার্জ হয় এবং ওভারচার্জ না ঘটে।

  • ব্যাটারির ভোল্টেজ ও ক্যাপাসিটি অনুযায়ী চার্জার নির্বাচন
  • Output Current সাধারণত ব্যাটারির 10–30% হওয়া উচিত
  • সুরক্ষা ফিচার (Overvoltage, Short circuit, Thermal cutoff) থাকা আবশ্যক

৫. ডিসচার্জিং পদ্ধতি ও রন্টাইম হিসাব

ডিসচার্জিং হল সেই প্রক্রিয়া যেখানে ব্যাটারি তার সঞ্চিত শক্তি ব্যবহার করে বাহ্যিক সার্কিটে ইলেকট্রন সরবরাহ করে। এটি ব্যাটারির ভোল্টেজ ধীরে ধীরে কমিয়ে দেয়।

C-রেট নির্দেশ করে ব্যাটারি কত দ্রুত চার্জ বা ডিসচার্জ হচ্ছে। উদাহরণ: 1C মানে এক ঘণ্টায় সম্পূর্ণ ডিসচার্জ; 2C মানে আধা ঘণ্টায়।

DoD মানে ব্যাটারির কত শতাংশ শক্তি ব্যবহৃত হয়েছে। ০% DoD মানে পুরো চার্জ; ১০০% DoD মানে পুরো ডিসচার্জ। এটি ব্যাটারির আয়ুতে প্রভাব ফেলে।

রন্টাইম = ব্যাটারির ক্যাপাসিটি (Ah) × ভোল্টেজ (V) ÷ লোড পাওয়ার (Watt)।
উদাহরণ: 12V, 100Ah ব্যাটারি × 12V = 1200Wh ÷ 100W লোড = ১২ ঘণ্টা।

কম তাপমাত্রায় ব্যাটারির রসায়ন ধীর হয় ফলে পাওয়ার ডেলিভারি কমে যায়। বেশি তাপে ব্যাটারি অতিরিক্ত দ্রুত ডিসচার্জ হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

অতিরিক্ত ডিসচার্জে ব্যাটারির সেল ভোল্টেজ বিপজ্জনকভাবে কমে যায়, যা স্থায়ীভাবে সেল ড্যামেজ করতে পারে এবং পুনরায় চার্জিং ব্যর্থ হয়।

হাই-ড্রেন ডিভাইস (যেমন পাওয়ার টুল) তীব্র কারেন্ট নেয়, তাই উপযুক্ত C-রেট থাকা দরকার। লো-ড্রেন ডিভাইস (যেমন রিমোট) দীর্ঘসময় ধরে ধীরে ডিসচার্জ হয়।

৬. স্মার্ট ব্যাটারি ও ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (BMS)

স্মার্ট ব্যাটারি এমন একটি সিস্টেম যা নিজের অবস্থা বুঝতে পারে এবং সেই অনুযায়ী চার্জিং, ডিসচার্জিং, ও সুরক্ষা নিয়ন্ত্রণ করে। এতে BMS, সেন্সর, ও কমিউনিকেশন চিপ থাকে।

BMS এর কাজ:
  • সেল ব্যালান্সিং
  • ওভারচার্জ/ডিসচার্জ সুরক্ষা
  • তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণ
  • SoC ও SoH গণনা
  • শর্ট সার্কিট ও কারেন্ট মনিটরিং

Fuel gauge ব্যাটারির অবশিষ্ট চার্জ অনুমান করে ভোল্টেজ, কারেন্ট ও টেম্পারেচার তথ্য বিশ্লেষণ করে। এটি SoC নির্ণয়ে সাহায্য করে।

SMBus/I2C হল সিরিয়াল প্রটোকল যা স্মার্ট ব্যাটারির তথ্য যেমন ভোল্টেজ, SoC, তাপমাত্রা ইত্যাদি হোস্ট ডিভাইসে পাঠায়। এটি চার্জার ও সিস্টেমকে রিয়েলটাইম তথ্য দেয়।

সেল ব্যালান্সিং মানে প্রতিটি সেলের ভোল্টেজ সমান রাখা যাতে কোন সেল বেশি বা কম চার্জ না হয়। এটি ব্যাটারির কার্যকারিতা ও নিরাপত্তা রক্ষা করে।

  • SoC (State of Charge): ব্যাটারির বর্তমান চার্জ লেভেল
  • SoH (State of Health): ব্যাটারির সামগ্রিক অবস্থা বা দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতা

৭. ব্যাটারির জন্ম থেকে অবসরকাল (Storage, Transport, Recycling)

নতুন ব্যাটারিকে প্রায়শই ফরমেশন চার্জিং এর মাধ্যমে সক্রিয় করা হয়, যাতে অভ্যন্তরীণ রাসায়নিক স্থিতি সঠিকভাবে গঠিত হয় এবং সুরক্ষা সার্কিট ঠিকভাবে কাজ করে।

ব্যাটারি ঠাণ্ডা, শুকনো ও কম আর্দ্রতার জায়গায় সংরক্ষণ করতে হয়।
লিথিয়াম ব্যাটারি: প্রায় ৩০-৫০% চার্জে সংরক্ষণ করাই ভালো।
নিয়মিত চার্জিং প্রয়োজন: প্রতি ৩–৬ মাসে।

ব্যাটারি পরিবহনে প্রয়োজন:
  • UN38.3 সার্টিফিকেট (লিথিয়াম ব্যাটারির জন্য বাধ্যতামূলক)
  • MSDS (Material Safety Data Sheet)
  • প্যাকেজিং এর উপর যথাযথ লেবেল ও সতর্কবার্তা

ব্যাটারিতে সীসা, লিথিয়াম, কপার ইত্যাদি মূল্যবান উপাদান থাকে যা পুনঃব্যবহারযোগ্য। এছাড়া, রিসাইক্লিং পরিবেশ দূষণ কমায় এবং সুরক্ষাও বৃদ্ধি করে।

  • Lead-acid ব্যাটারি: সবচেয়ে বেশি রিসাইক্লিংযোগ্য
  • NiCd ব্যাটারি: রিসাইক্লিংযোগ্য কিন্তু ক্যাডমিয়াম দূষণজনক
  • Li-ion ব্যাটারি: রিসাইক্লিং পদ্ধতি জটিল কিন্তু উন্নয়নাধীন

রিসাইক্লিং পদ্ধতি:
  • Mechanical shredding
  • Pyrometallurgical (তাপে গলিয়ে ধাতু সংগ্রহ)
  • Hydrometallurgical (রাসায়নিক দ্রবণে ধাতু পৃথককরণ)

৮. ব্যাটারির জীবনকাল বৃদ্ধি ও রক্ষণাবেক্ষণ

  • ওভারচার্জ ও ওভারডিসচার্জ
  • উচ্চ বা নিম্ন তাপমাত্রা
  • দীর্ঘদিন ব্যবহার না করা
  • খারাপ চার্জার ব্যবহার

ব্যাটারিকে ৩০%–৮০% চার্জ সীমার মধ্যে রাখা, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা, দ্রুত চার্জ কম ব্যবহার করা এবং নির্ভরযোগ্য চার্জার ব্যবহার করা উচিত।

দৈনিক ২০%–৮০% চার্জিং সীমা মেনে চলা উচিত। সম্পূর্ণ ০% বা ১০০% চার্জ বারবার না করা ভালো। রাতে চার্জে লাগিয়ে রাখা এড়ানো উচিত।

লিথিয়াম ব্যাটারি দীর্ঘদিন ব্যবহারে না রাখলে ডিসচার্জ হয়ে গভীর সেল ক্ষতি হতে পারে। প্রতি ৩ মাসে একবার চার্জ দেওয়া উচিত।

লিড-অ্যাসিড ব্যাটারিতে সালফেশন মানে সীসার উপর সালফেট ক্রিস্টাল জমা হওয়া, যা সেলের ক্ষমতা কমায়। নিয়মিত চার্জিং ও ডিসচার্জিং এবং Equalization দ্বারা প্রতিরোধ করা যায়।

এটি লিড-অ্যাসিড ব্যাটারির জন্য একটি নিয়মিত ও উচ্চ ভোল্টেজে চার্জ, যা সেল ব্যালান্স করে ও সালফেশন অপসারণ করে। প্রতি মাসে একবার দেওয়া যেতে পারে।

মেমোরি ইফেক্ট মানে NiCd ব্যাটারিতে অসম্পূর্ণ চার্জ-ডিসচার্জ এর কারণে সেলের সক্ষমতা কমে যাওয়া। NiMH ও Li-ion এ তা খুবই কম।

ব্যাটারির আয়ু সাধারণত “সাইকেল লাইফ” দ্বারা পরিমাপ করা হয়—যেখানে একটি চার্জ-ডিসচার্জ সাইকেল ধরা হয়। সাধারণ Li-ion ব্যাটারি ৩০০–১০০০ সাইকেল পর্যন্ত চলতে পারে।

৯. টেস্টিং ও মনিটরিং পদ্ধতি

ব্যাটারির স্বাস্থ্য, চার্জ ক্ষমতা, নিরাপত্তা ও কার্যক্ষমতা নিরীক্ষণের জন্য টেস্টিং প্রয়োজন। এটি ত্রুটি শনাক্ত করে ও রক্ষণাবেক্ষণ সহজ করে।

SoC সাধারণত ভোল্টেজ, কারেন্ট ও সময় অনুসারে অনুমান করা হয় (Coulomb counting)।
SoH বোঝার জন্য ভোল্টেজ ড্রপ, ইম্পিডেন্স ও চার্জ ধারণক্ষমতা বিশ্লেষণ করা হয়।

Battery analyzer ব্যাটারির ভোল্টেজ, কারেন্ট, চার্জ/ডিসচার্জ সাইকেল, ক্যাপাসিটি, ও ইম্পিডেন্স পরিমাপ করে এবং রিপোর্ট তৈরি করে।

EIS হল একটি পরিমাপক পদ্ধতি যা ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ অবস্থা বিশ্লেষণ করে ইম্পিডেন্স রেসপন্সের মাধ্যমে। এটি গবেষণা ও উন্নয়নের জন্য ব্যবহৃত হয়।

বেশি ইম্পিডেন্স মানে বেশি প্রতিরোধ, যার ফলে তাপ উৎপন্ন হয়, আউটপুট কমে যায় এবং ব্যাটারির কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এটি ব্যাটারির বয়সের লক্ষণও হতে পারে।

ব্যাটারির টার্মিনালে মিটার সেট করে ভোল্টেজ মাপা যায়। ফুল চার্জ ব্যাটারির ভোল্টেজ সাধারণত ৪.২V (Li-ion), ১২.৬V (Lead-acid) ইত্যাদি হয়।

এটি একটি নির্দিষ্ট লোড দিয়ে ব্যাটারিকে ডিসচার্জ করে দেখতে হয় কতক্ষণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। এর মাধ্যমে বাস্তব রন্টাইম ও ক্যাপাসিটি বোঝা যায়।

যখন একাধিক ব্যাটারি একত্রে ব্যবহৃত হয় (যেমন UPS বা EV তে), তখন সমষ্টিগত পরীক্ষা প্রয়োজন হয়। এটি ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে করা হয়।

১০. ব্যাটারির ব্যবহার ক্ষেত্র ও শিল্প

  • মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ
  • ইলেকট্রিক যানবাহন (EV)
  • সৌরবিদ্যুৎ সংরক্ষণ
  • UPS, ইনভার্টার
  • আকাশযান ও সামরিক সরঞ্জাম
  • গ্রিড ব্যাকআপ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাপ্লিকেশন

  • উচ্চ শক্তি ঘনত্ব
  • দীর্ঘ সাইকেল লাইফ
  • তাপমাত্রা সহনশীলতা
  • দ্রুত চার্জ সক্ষমতা
  • BMS সহ নিরাপদ প্যাকেজিং

ব্যাটারি গ্রিড সিস্টেমে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ সংরক্ষণ করে এবং চাহিদা অনুযায়ী মুক্ত করে। এটি লোড ব্যালেন্স করে ও পিক আওয়ার সাপোর্ট দেয়।

Sealed lead-acid (VRLA) ব্যাটারি সবচেয়ে সাধারণ, কারণ এগুলো কম রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন ও নিরাপদ। লিথিয়াম ব্যাটারি দীর্ঘস্থায়ী ও দ্রুত চার্জ হয়, তবে ব্যয়বহুল।

ব্যাটারি দিনের অতিরিক্ত সৌরশক্তি সংরক্ষণ করে এবং রাতে বা সূর্যহীন সময়ে ব্যবহার করতে দেয়। এটি সোলার সিস্টেমের নিরবিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করে।

উচ্চ শক্তি ও ওজন হালকা হওয়ার কারণে Li-polymer ব্যাটারি ড্রোনে ব্যবহৃত হয়। অ্যারোস্পেসে লিথিয়াম সালফার, সিলভার জিঙ্ক বা বিশেষ কাস্টম ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়।

নির্ভরযোগ্য ও দীর্ঘমেয়াদী ব্যাটারি যেমন লিথিয়াম আয়ন বা লিথিয়াম থায়োনাইল ক্লোরাইড ব্যাটারি ব্যবহৃত হয় পেসমেকার, ইনফিউশন পাম্প, মনিটরিং ডিভাইসে।

  • তাপমাত্রা ও কম্পন
  • দীর্ঘমেয়াদী কর্মক্ষমতা
  • নিয়মিত মনিটরিং ও রক্ষণাবেক্ষণ
  • সাশ্রয়ী উৎপাদন খরচ

১১. গ্লসারী ও সংক্ষিপ্ত রূপ (Glossary & Abbreviations)

SoC (State of Charge) মানে ব্যাটারির বর্তমান চার্জের স্তর। এটি শতাংশে প্রকাশ করা হয়।

SoH (State of Health) ব্যাটারির সামগ্রিক স্বাস্থ্য বোঝায়—ব্যাটারির নতুন অবস্থার তুলনায় পারফরম্যান্স কেমন।

BMS (Battery Management System) হলো এমন একটি সার্কিট যা ব্যাটারির সুরক্ষা, ব্যালান্সিং ও তথ্য পর্যবেক্ষণের কাজ করে।

CC = Constant Current
CV = Constant Voltage
এটি ব্যাটারি চার্জিং প্রোফাইল বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

DOD (Depth of Discharge) ব্যাটারির কত শতাংশ চার্জ ব্যবহৃত হয়েছে তা বোঝায়। DOD যত কম হবে, আয়ু তত বেশি হয়।

Ah (Ampere-hour) হলো ব্যাটারির ক্ষমতা নির্দেশক একটি একক, যা বলে ব্যাটারি কতক্ষণ কত অ্যাম্পিয়ার সরবরাহ করতে পারে।

এটি একটি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান, যা লিথিয়াম ব্যাটারির পরিবহন ও পরীক্ষার জন্য প্রযোজ্য।

VRLA = Valve Regulated Lead Acid. এটি সিলড লিড অ্যাসিড ব্যাটারির একটি প্রকার, যা রক্ষণাবেক্ষণহীন।

SMBus (System Management Bus) হলো একটি কমিউনিকেশন প্রটোকল যা ব্যাটারির তথ্য চার্জার বা সিস্টেমে পাঠাতে ব্যবহৃত হয়।

EIS = Electrochemical Impedance Spectroscopy. এটি ব্যাটারির অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ও অবস্থা বিশ্লেষণে ব্যবহৃত হয়।

১২. ব্যাটারি ইউনিভার্সিটি ও গবেষণা উৎস

Battery University একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম যেখানে ব্যাটারির ইতিহাস, ব্যবহার, চার্জিং, গবেষণা ও নিরাপত্তা বিষয়ে শিক্ষামূলক তথ্য পাওয়া যায়। এটি Cadex Electronics দ্বারা পরিচালিত।

এটি ব্যাটারি প্রযুক্তির ব্যবহারকারী, গবেষক ও নির্মাতাদের জন্য তথ্যভান্ডার। এতে আধুনিক টিপস, সেফটি গাইড ও টেকনিক্যাল ডেটা সহজ ভাষায় উপস্থাপন করা হয়।

  • Battery chemistry
  • Charging methods
  • Battery care & maintenance
  • Failure analysis
  • Energy storage trends

Cadex একটি কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান, যারা Battery Analyzer, BMS এবং Battery University পরিচালনা করে। তাদের পণ্য ও গবেষণা সারা বিশ্বে স্বীকৃত।

  • উচ্চ এনার্জি ঘনত্ব
  • দ্রুত চার্জিং প্রযুক্তি
  • সলিড স্টেট ব্যাটারি
  • নতুন উপাদান যেমন গ্রাফিন, লিথিয়াম সালফার
  • রিসাইক্লিং ও নিরাপত্তা উন্নয়ন

  • MATLAB & Simulink
  • COMSOL Multiphysics
  • Battery Design Studio
  • Cycler & Tester Interface Software

  • Journal of Power Sources
  • Energy Storage Materials
  • Advanced Energy Materials
  • Nature Energy

  • MIT (USA)
  • Stanford University
  • Fraunhofer Institute (Germany)
  • Tsinghua University (China)

১৩. Cadex ও লেখকের ভূমিকা

Cadex একটি কানাডাভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান, যারা ব্যাটারি বিশ্লেষণ যন্ত্র, চার্জার, ও ব্যাটারি স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ সরঞ্জাম তৈরি করে এবং Battery University পরিচালনা করে।

Cadex-এর পণ্য ব্যবহার করা হয়:
  • টেলিকম ও সেনাবাহিনী
  • চিকিৎসা ও জরুরি সেবা
  • এভিয়েশন, ব্যাটারি ল্যাব ও গবেষণা

Battery University এবং “Batteries in a Portable World” বইটি তৈরি করেছেন Isidor Buchmann, যিনি Cadex-এর প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যাটারি বিশ্লেষণ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ।

Isidor Buchmann হচ্ছেন Cadex-এর প্রতিষ্ঠাতা এবং Battery University ও এই বইটির লেখক। তিনি ব্যাটারি বিশ্লেষণ ও পরিচালনার ক্ষেত্রে একজন বিশ্বমানের গবেষক ও উদ্যোক্তা।

Cadex গবেষণার মাধ্যমে ব্যাটারির SoH, SoC, ও ব্যালান্সিং প্রযুক্তি উন্নয়ন করেছে এবং তাদের সরঞ্জাম বিশ্বব্যাপী ব্যাটারি স্বাস্থ্য নিরীক্ষণে ব্যবহৃত হচ্ছে।

লেখক ব্যবহারকারী, ইঞ্জিনিয়ার এবং গবেষকদের জন্য সহজ ও স্পষ্ট ভাষায় ব্যাটারির জটিল বিষয় ব্যাখ্যা করেছেন। বই ও Battery University উভয়ই শিক্ষামূলক ও ব্যবহারযোগ্য তথ্যভিত্তিক।

Cadex C7000 Series Battery Analyzer, QuickSort battery test system, Battery Maintenance Systems, এবং Portable battery analyzer — এগুলো তাদের মূল পণ্য।

১৪. দ্য ব্যাটারি প্যারাডক্স (Afterword)

লেখক বলেন, ব্যাটারি প্রযুক্তি যত উন্নত হচ্ছে, আমাদের ব্যবহারও তত বেড়ে যাচ্ছে। ফলে আরও ভালো ব্যাটারির প্রয়োজন তৈরি হচ্ছে — এটাই ব্যাটারি প্যারাডক্স।

প্রযুক্তির বিস্তার, মোবাইল ডিভাইস, ইভি ও গ্রিড স্টোরেজ ব্যাটারির ওপর নির্ভরতা বাড়িয়েছে। তাই চাহিদা সবসময় সরবরাহকে ছাড়িয়ে যায়।

কিছু উন্নয়ন পরিবেশবান্ধব হলেও অনেক ব্যাটারি উপাদান যেমন লিথিয়াম, কোবাল্ট ইত্যাদি নিষ্কাশন ও উৎপাদন পরিবেশের ওপর চাপ ফেলে। তাই উন্নয়নের সাথে পুনঃব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ।

লেখক বলেন, ব্যবহারকারীকে সচেতন হতে হবে — ব্যাটারি অপচয় কমাতে হবে, যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে এবং রিসাইক্লিং বাড়াতে হবে। এছাড়া প্রযুক্তির দায়িত্বশীল ব্যবহার জরুরি।

তিনি বলেন, “Battery is not just a device; it’s a responsibility.” — এর মাধ্যমে বোঝাতে চেয়েছেন ব্যাটারির ব্যবহার বুঝেশুনে এবং টেকসইভাবে করতে হবে।

১৫. বিবিধ ও ব্যাটারি রসায়ন

ব্যাটারিতে দুটি ধাতুর মধ্যে ইলেকট্রন স্থানান্তর ঘটে। একটি ধাতু ইলেকট্রন হারায় (অক্সিডেশন), আরেকটি ইলেকট্রন গ্রহণ করে (রিডাকশন)। এই রেডক্স বিক্রিয়াই বৈদ্যুতিক শক্তি তৈরি করে।

এটি লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির অ্যানোডে গঠিত একটি পাতলা স্তর যা ইলেকট্রন ব্লক করে কিন্তু আয়ন প্রবাহের সুযোগ দেয়। এটি ব্যাটারির আয়ু বাড়ায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।

এটি এমন একটি স্তর যা ব্যাটারির ইলেকট্রোডে গঠিত হয়ে শক্তি প্রবাহ হ্রাস করে। কিছু ব্যাটারিতে এটি রক্ষণাবেক্ষণ ও স্থায়ীত্বের জন্য উপকারী, কিন্তু অত্যধিক হলে কর্মক্ষমতা কমায়।

যখন ব্যাটারির ভিতরে তাপমাত্রা বেড়ে যায় এবং সেটি আরও বেশি তাপ উৎপাদন করে, যা বিস্ফোরণ বা আগুন পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারে, সেটি হল thermal runaway।

লিথিয়াম-এয়ার ব্যাটারি অক্সিজেন ব্যবহার করে এবং অনেক বেশি শক্তি ঘনত্ব সরবরাহ করতে পারে। এটি ভবিষ্যতে ইলেকট্রিক যানবাহনের জন্য একটি সম্ভাব্য প্রযুক্তি।

Nickel-Cadmium (NiCd) ব্যাটারিতে ক্যাডমিয়াম থাকে যা বিষাক্ত। Lead-acid ব্যাটারিতে সীসা থাকে। উভয়েরই রিসাইক্লিং ও ব্যবহারে সতর্কতা প্রয়োজন।

ব্যাটারির প্লেট ও সেপারেটরের বিভ্রাটে ক্রিস্টাল জমে যায়, যা self-discharge বাড়িয়ে দেয় — একে mossing বা soft short বলা হয়।

সিলিকন অ্যানোডে অনেক বেশি লিথিয়াম ধারণক্ষমতা থাকে (গ্রাফাইটের তুলনায় ১০ গুণ)। তবে এর সমস্যা হলো আকার পরিবর্তন ও সাইকেল লাইফের সীমাবদ্ধতা।

ডেনড্রাইট হলো তীক্ষ্ণ লিথিয়ামের স্ফটিক যা চার্জিংয়ের সময় গঠিত হতে পারে এবং সেপারেটর ভেদ করে শর্ট সার্কিট ঘটায়, ফলে আগুন লাগতে পারে।